পবিত্র মাহে রামাদান এলেই খাবার দাবার নিয়ে আমাদের অনেকেরই ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা পুষ্টিকর খাবার খেতে চান শরীরের উপকারিতার জন্য কিন্তু কি কি খাবার খেলে সেই লক্ষ্য পূরণ হবে তা বুঝতে পারেন না। রামাদানে ইফতারি কিংবা সেহেরীতে এই চিন্তা গুলো যেন আরো ও ডালপালা মেলে।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে এই পবিত্র মাহে রামাদানে ইফতারিতে কি কি খাবার খাওয়া যেতে পারে চলুন তার কিছুটা ধারণা নিয়ে আসি।
ইফতারিতে খাবার এর ক্ষেত্রে সবার প্রথমেই যা প্রায়োরিটি দিতে হবে তা হলো “পানি “। রোজা অবস্থায় যেহেতু সারাদিন পানি খাওয়া যায় না তাই আমাদের পানির চাহিদা থাকে।পানির ক্ষেত্রে যদি ডাবের পানি হয় তাহলে খুবই ভালো কারণ ডাবের পানিতে রয়েছে পটাশিয়াম। ডাবের পানির সাথে যদি বেল বা বেলের শরবত মিশানো যায় কোনো ধরণের চিনি ব্যবহার না করে তাহলে খুব ভালো হয়। আর্টিফিশিয়াল চিনি ইফতারিতে গ্রহণ না করাই উত্তম। এর পরিবর্তে আমরা ১/ ২ টি খেজুর খেতে পারি।
যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের খেয়াল রাখতে হবে কতটুকু শর্করা খেলে আপনার ডায়াবেটিসটা নিয়ন্ত্রণে থাকছে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা চাইলে অল্প একটু মুড়ি খেতে পারেন, ছোলা বুট খেতে পারেন তবে ছোলা বুটের সাথে আলু না দেয়াই উত্তম। আর কতটুকু তেল দিচ্ছেন সেই দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।
মুড়ি, ছোলাবুট এইগুলো হচ্ছে শর্করা। এরপর দেখি আর কি কি শর্করা খাওয়া যেতে পারে ! ইফতারিতে বিভিন্ন ধরণের ফলমূল খাওয়া যেতে পারে। যেমন – পেয়ারা , আনারস , কমলা , আমড়া , জাম্বুরা , কয়েক ফালি তরমুজ ও খাওয়া যেতে পারে। এর বাইরে ইফতারিতে আর কি কি খাওয়া যেতে পারে ?
আপনি চাইলে ডিম্ আর বাদাম ও খেতে পারেন। ডিম্ আর বাদাম অবশ্যই খাঁটি ঘি দিয়ে ভাজার চেষ্টা করবেন। এই খাবার গুলো আপনি চাইলে ইফতারিতে খেতে পারেন আর ইফতারি করার পর ঘন্টা খানেক সময়ের মধ্যে চেষ্টা করবেন রাতের খাবার টাও সেরে ফেলতে। এবং রাতের খাবারে যতটা পারেন সবুজ শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ভাত না খাওয়াই ভালো। আর যদি দেখেন যে অল্প একটু ভাত খেলে আপনার ডায়াবেটিস তেমন বাড়ছে না তাহলে খেতে পারেন। আর যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন তাদের উচিত হবে ভাত না খাওয়া। যদি মনে করেন যে সামান্য একটু ভাত খেলে আপনার ভালো লাগছে তাহলে খেতে পারেন।
ভাত খেতে হবে পরিমানে কম আর লাল চাল হলে ভালো এবং ভাতের সাথে সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। এর সাথে আপনি চাইলে মাছ অথবা মাংস খেতে পারেন। মাছের মধ্যে সামুদ্রিক মাছ অথবা দেশীয় মাছ যেগুলো তৈলাক্ত মাছ , মাছের ডিম্ বা ইলিশ মাছের ডিম্ , অল্প পরিমানে গরুর মগজ বা কলিজা, খাসির মগজ বা কলিজা, গরুর মাংস বা খাসির মাংস , খেয়াল রাখতে হবে যে মাংস বেশি খাওয়া যাবে না। মাংস পরিমানে কম খাওয়াই ভালো যদিও তা শরীরের চাহিদার উপর নির্ভর করে। অনেকেই আছে যারা বডি বিল্ড করতে চাই তারা চাইলে একটু বেশি খেতে পারে। তবে তা আপনাকে অবশ্যই ব্যায়াম করে পুষিয়ে নিতে হবে।
এইখানে যে বিষয় গুলো লক্ষণীয় তা হচ্ছে, শর্করা খাবার আপনাকে চিনতে হবে এবং জানতে হবে। কারণ শর্করার পরিমান আপনাকে পরিমিত রাখতে হবে। আপনি যে ফল গুলো খাবেন তা এমনভাবে খাবেন যাতে আপনি পুষ্টি ও পান আবার তা আপনার ওজন কমাতে কোনো ধরণের বাঁধা না হয়ে দাঁড়ায়।
আর একটা বিষয় গুরুত্বপূর্ণ আর তা হলো ডিপ ফ্রাই কোনো কিছু না খাওয়া অর্থাৎ ডুবন্ত তেলে ভাজা কোনো কিছু না খাওয়াই উত্তম। যেমন পিয়াজু , বেগুনি বা যদি মাংস ও ঐভাবে তৈরী করে তাহলে তা এভোইড করাই উত্তম।
উৎস
ডাক্তার জাহাঙ্গীর কবির এর ইউটিউব চ্যানেল হতে